এপ্রিল ১৯, ২০২২
ম্যাসেঞ্জারে খুনের পরিকল্পনা তালার কাশিপুরে শাশুড়িকে হত্যা চেষ্টা মামলা রেকর্ড করেনি পুলিশ
তালা প্রতিনিধি : তালায় পরকীয় প্রেমের জেরে শাশুড়িকে শ্বাসরোধে হত্যা চেষ্টা মামলা ৪দিনেও রেকর্ড করেনি পাটকেলঘাটা থানা পুলিশ। উল্টো হত্যা চেষ্টাকারী গৃহবধুর পক্ষ নিয়ে মামলা না করে আপোস মিমাংসা করার জন্য থানা পুলিশ মামলার বাদীকে হুমকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার কাশিপুর গ্রামের খোর্দ্দ পাড়ার চন্দ্র শেখর দাশের ছেলে যুগোল দাশ জানান, প্রায় ৭বছর আগে তিনি তালার বারাত গ্রামের শ্যামল দাশের মেয়ে প্রিয়ন্তী দাশকে বিয়ে করেন। বর্তমানে তাদের ঘরে ৫বছর বয়সী এক কন্যা সন্তান রয়েছে। যুগোল দাশ বলেন, তিনি পেশায় গরুর ব্যবসায়ী হওয়ায় প্রায় সময় তাকে বিভিন্ন এলাকায় থাকতে হয়। তিনি বাড়িতে না থাকলে সেদিন রাতে তার স্ত্রী প্রিয়ন্তী দাশের সাথে তার মা সাধনা দাশ থাকেন। গত শনিবার যুগোল দিনাজপুরে থাকায় রাতে প্রিয়ন্তীর সাথে তার মা সাধনা দাশ ঘুমিয়েছিল। রাত দেড়টার দিকে স্ত্রী প্রিয়ন্তী দাশ একই গ্রামের সুভাষ দাশের ছেলে দিপু দাশ’র সহযোগীতায় পরিকল্পিত ভাবে হাত, পা বেঁধে তার মাকে শ্বাসরোধ করে হত্যার চেষ্টা করে। এসময় এক প্রতিবেশি বিষয়টি বুঝতে পেরে সাধনাকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে। পরে তাকে স্থানীয় চিকিৎসা শেষে রোববার সকালে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অপর দিকে ঘটনার সময় হত্যার চেষ্টাকারী দিপু পালিয়ে গেলেও পরিবারের ও গ্রামের লোকজন পুত্রবধু প্রিয়ন্তীকে আটক করে। সকালে গ্রামের সালিস সভায় দিপু হত্যা চেষ্টার পরিকল্পনা ও ঘটনার বিবরণ প্রকাশ্যে ফাঁস করে দেয়। এছাড়া তারা দু’জনে কিভাবে ও কখন সাধনা দাশকে খুন করবে তা ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারে একে অপরের সাথে আলোচনা করে। যা স্ক্রীন শর্ট দিয়ে গ্রামবাসীর কাছে দিয়ে দেয় দিপু। শাশুড়িকে কিভাবে খুন করা হবে এবং খুনের সময় কার কি ভূমিকা থাকবে তা ম্যাসেঞ্জারে আলোচনার মাধ্যমে পরিকল্পনা করে পুত্রবধু প্রিয়ন্তী ও যুবক দিপু দাশ। এঘটনার সাথে নাম প্রকাশ না করা অপর এক যুবক জড়িত থাকলেও ভয়ে সে হত্যা মিশনে অংশ নেয়নি বলে ম্যাসেঞ্জারের চ্যাটিং থেকে জানা যায়। এবিষয়টি ফাঁস হবার পর এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। এদিকে মাকে শ্বাসরোধে হত্যার চেষ্টার ঘটনার পর থেকে ঘটনার হোতা প্রিয়ন্তী দাশ তার পিতার বাড়িতে অবস্থান করছে। ঘটনায় পাটকেলঘাটা থানায় একটি এজাহার দাখিল করা হলেও পুলিশ তা ৪দিনের ব্যবধানেও রেকর্ড করেনি। উল্টো তদন্তকারী অফিসার এসআই কৃষ্ণ চন্দ্র মামলা না করে বিষয়টি আপোষ মিমাংসা করে নেওয়ার জন্য বাদীকে চাপ প্রয়োগ করছে। এছাড়া কথা না শুনে মামলা করার চেষ্টা করলে ফল ভাল হবে না মর্মে হুমকি দেয়া হয়েছে বলে যুগোলের পিতা চন্দ্র শেখর দাশ অভিযোগ করেছেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে পাটকেলঘাটা থানার ওসি কাঞ্চন কুমার রায় বলেন, এবিষয়ে আমার কোনও বক্তব্য নাই। তবে তারা আমার কাছে এখনও আসেনি বা কোনও অভিযোগ পায়নি। এ ব্যপারে অভিযুক্ত প্রিয়ন্তী দাশের ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তার পিতা শ্যামল দাশ জানান, ঘটনা যায় ঘটুক এ বিয়ষে পাটকেলঘাটা থানায় একটি সালিস হয়েছে। সালিসে সব মিটে গেছে। তবে, ঘটনার শিকার সাধনা দাশের স্বামী চন্দ্র শেখর জানান, কোনও সালিস হয়নি। আমরা থানায় মামলা করতে চাই কিন্তু পুলিশ মামলা না নিয়ে আমাদের সালিসের মাধ্যমে আপোস মিমাংসা করার জন্য চাঁপ দিচ্ছে। এবষিয়ে তিনি উর্দ্ধতন পুলিশ প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
8,585,040 total views, 1,726 views today |
|
|
|